ট্রান্সফারওয়াইজ একাউন্ট খোলা, ভেরিফিকেশন এবং সুবিধা/অসুবিধা

wise Bangladesh tutorial

গত কিছুদিন আগে পেওনিয়ারের কার্ড ব্যালেন্স ফ্রিজ সমস্যায় পুরো বিশ্বের ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে বেশ উদ্বেগের তৈরি হয়েছে। ব্যক্তিগত ভাবে আমার কয়েক হাজার ডলার আটকে ছিলও, যা নিয়ে আমি যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ছিলাম। এর পরই ওয়াইজ এর সন্ধান পাই। যেটার সুবিধাগুেলো আমাকে বেশ অবাক করেছে।

যদিও পেওনিয়ারের সমস্যা ১ সপ্তাহের মধ্যেই সমাধান হয়ে যায়, কিন্তু ওয়াইজ আমাকে যাদু করেছে, যার ফলে পেওনিয়ার এখন খুব সামান্যই ব্যবহার করা হয়। এই আর্টিকেলে আমি Wise এর কমন কয়েকটা বিষয় নিয়ে কথা বলবো। পুরোটা পড়ুন অথবা আপনি যে বিষয়ে জানতে আগ্রহী সেই বিষয়ে পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।

  1. যেভাবে ওয়াইজ একাউন্ট খুলবেন
  2. ওয়াইজ থেকে ব্যাংক একাউন্ট পাওয়া এবং ভেরিফাই করার নিয়ম
  3. ওয়াইজ থেকে টাকা উইথড্র করার নিয়ম
  4. ওয়াইজে ব্যবহারের সুবিধা সমূহ
  5. ওয়াইজ থেকে পাওয়া ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহারের সুবিধা সমুহ
  6. ওয়াইজের অসুবিধা সমূহ
  7. ওয়াইজ এর নতুন আপডেট সমূহ
  8. আপওয়ার্ক থেকে ওয়াইজে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম

২০১২ থেকে ফ্রিল্যান্সিং করছি, শুরু থেকে গত ২০২০ এর শিষ দিক পর্যন্ত পেওনিয়ারের মাধ্যমেই সকল লেনদেন করেছি। যদিও আপওয়ার্ক ডাইরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফার চালু করার কিছুদিন পর কয়েকবার সেটা ব্যবহার করেছি। যখন দেখলাম তারা পেওনিয়ার থেকে প্রায় ২ টাকা কম দিচ্ছে প্রতি ডলারে তখন সেটা আর ব্যবহার করি না।

তবে বর্তমানে আমি আমার ৯০-৯৫ ভাগ লেনদেন ওয়াইজের মাধ্যমে করে থাকি। শুধু মাত্র ফাইভার এবং দুই একজন ক্লায়েন্ট বাদে সবার পেমেন্ট ট্রান্সফারওয়াইজের মাধ্যমে নিয়ে থাকি।

ট্রান্সফারওয়াইজ একাউন্ট / ব্যাংক একাউন্ট খোলা এবং ভেরিফাই করার নিয়ম

যেভাবে ট্রান্সফার ওয়াইজ একাউন্ট খুলবেন

সতর্কতা: অর্থনৈতিক একাউন্ট খোলার সময় কোন তথ্য যেন ভুল না হয়। এনআইডি এর সাথে মিল রেখে একাউন্ট খুলবেন।

প্রথমেই এই লিংকে (https://wise.com/) গিয়ে রেজিস্টার করে নিন। আপনি ব্যক্তিগত কিংবা বিজনেসের জন্য করতে পারেন। তবে আমরা বেশিরভাগে-ই ব্যাক্তিগত একাউন্ট করবো। রেজিস্টার করার জন্য আপনার NID কিংবা পাসপোর্ট এর সাথে মিল রেখে নাম এবং জন্মতারিখ মিল থাকতে হবে। ফোন নাম্বারে ওটিপি আসবে সেটা দিয়ে ভেরিফাই করে নিতে হবে। একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন কমপ্লিট।

যেভাবে ওয়াইজ একাউন্ট ভেরিফাই করবেন

একাউন্ট খোলার সাথে সাথে ফোন ভেরিফিকেশন ছাড়া আর কিছু চাইবে না। ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে ২০ ডলার লোড করতে হবে। সেটা করার পর পরই ভেরিফিকেশনের জন্য বলবে। আমি পাসপোর্টের কপি সেন্ড করেছি। কয়েক মিনিটের মধ্যে আমার একাউন্ট ভেরিফাই হয়ে গিয়েছে এবং আমি ব্যাংক ডিটেইলস পেয়ে গেছি।

যদিও অনেকের ক্ষেত্রে কার্ড বা পাসপোর্ট হাতে নিয়ে ফটো আপলোড দিতে বলা হয়।

এখানে স্মরণ রাখা ভালো, অনেকেই জানিয়েছে আগের লেমেনেটিং করা এন.আই.ডি তারা গ্রহন করে না। পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং নতুন ডিজিটাল আইডি কাড দিয়ে ভেরিফাই করা সহজ।

নোট: উল্লেখ্য যে কারো কারো হয়তো কার্ড হাতে নিয়ে ছবি তুলে সেটাও সাবমিট করতে হতে পারে। যদিও আমার এমন কিছু প্রয়োজন পড়ে নি।

কেন ব্যাংক একাউন্ট নিতে হবে? এবং ব্যাংক একাউন্টের সুবিধাগুলো কি? কি?

আপওয়ার্ক সহ যে কোন মার্কেটপ্লেস যারা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে টাকা পে করে সেসকল মার্কেটপ্লেস এবং সকল ক্লায়েন্ট থেকে টাকা রিসিভ করতে পারবেন।

ওয়াইজ থেকে পাওয়া ব্যাংক একাউন্টের প্রধান ২টা সুবিধা হচ্ছে আপনার ব্যাংকে পার্সোনাল এবং বিজনেস ২ ধরনের একাউন্ট থেকেই টাকা পাঠাতে পারবে। যেখানে পেওনিয়ারে শুধুমাত্র বিজনেস একাউন্ট থেকে টাকা রিসিভ করা যায়। অন্য বড় সুবিধাটি হচ্ছে টাকা রিসিভে কোন চার্জ নেই, কিন্তু পেওনিয়ার ১% ফি কেটে নেয়।

ট্রান্সফারওয়াইজ থেকে টাকা উইথড্র করার নিয়ম

ট্রান্সফারওয়াইজ একাউন্ট ব্যাবহারের সুবিধা সমূহ

আমরা যারা আইটি প্রফেশনাল তাঁদের টাকার ভাগ অনেককেই দিতে হয়। সুতরাং সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে কম ফি খরচ করে উপার্জিত টাকা নিজের পকেটে ঢুকাতে পারা। তবে ট্রান্সফারওয়াইজের ক্ষেত্রে সুবিধাটা একটু বেশি।

ক. সব থেকে কম ফি এবং সচ্ছতা

সহজ কথা হচ্ছে ফি পেওনিয়ারের অর্ধেক তাই আপনি পেওনিয়ার থেকে এরাউন্ড ১ টাকা রেট বেশি পাবেন।

অন্য আরেকটি সুবিধা হচ্ছে স্বচ্ছতা। আমরা কেউই জানতামনা পেওনিয়ার ২% উইথড্রয়াল চার্জ কাটে যেটা কিছুদিন আগ পর্যন্ত তারা কোথাও ম্যানশন করে নি। কিন্তু ওয়াইজ ফি এবং কনভার্সন চার্জ। কখন জমা হবে সব কিছু ট্র্যাকিং করতে পারবে। কথা আর কাজে মিল পাবেন। কোন গোপন চার্জ নেই। আপনি লেনদের করার আগেই সবকিছু আপনাকে খোলসা করে দেখিয়ে দিবে।

খ. সরকার ঘোষিত ২% প্রনোদনা পাবেন ফ্রিল্যান্সাররা

ট্রান্সফারওয়াইজ শুধু মাত্র কমই কাটে না বরং ২% এক্সট্রা বোনাস পাওয়া যায় সরকার থেকে যেটা পেওনিয়ারের মাধ্যমে টাকা আসলে পাওয়া যায় না।

গ. সবকিছুতে একটু বেশিই ফাস্ট

একাউন্ট ওপেনিং, ভেরিফিকেশন, ফান্ড ট্রান্সফার সব কিছুতে একটু বেশিই ফাস্ট! পেওনিয়ার যেখানে কয়েক দিন সময় নেয় সেখানে ট্রান্সফারওয়াইজ কয়েক মিনিট সময় নিয়ে থাকে।

ট্রান্সফারওয়াইজ একাউন্ট ব্যাবহারের অসুবিধা সমূহ

ওয়াইজ ব্যবহারে তেমন কোন অসুবিধা চোখে পড়ে নাই। তবে আপনি যদি সরকার থেকে ২% বোনাস না নিতে চান এটা একটা অসুবিধা।

এছাড়াও ওয়াইজ বিশ্বের অনেক দেশে প্রিপেইড কার্ডড প্রদান করলেও বাংলাদেশে এখনো দেওয়া শুরু করে নাই। তবে আশা করা যায় যে খুন শিগ্রই পাওয়া যাবে, যেহেতু খুব দ্রুত ব্যবহারকারী বাড়তেছে বাংলাদেশে।

ট্রান্সফারওয়াইজের আপডেট সমূহ

ডিসেম্বর ২০২০ আপডেট:

ওয়াইজ এখন পেওনিয়ারের মত ইউএস এবং ইউরোপিয়ান ব্যাংক একাউন্ট দিচ্ছে। সুতরাং যে কোন মার্কেটপ্লেসের টাকা অনায়াসেই নিয়ে আসা যাবে। রেট ভালো দেয় এবং ফি কম তাই এটাই বেস্ট অপশন।

ফেব্রুয়ারি ২০২১ আপডেট:

ওয়াইজ UK তে ফিজিক্যাল কার্ডের পাশাপাশি ভার্চুয়াল প্রিপেইড কার্ড দেওয়া শুরু করেছে। এর আগে ফিজিক্যাল প্রিপেইড কার্ড ছিলও। আশা করা যায় আমরাও খুব দ্রুত পেতে যাচ্ছি।

আপওয়ার্ক থেকে ওয়াইজে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম

পেমেন্ট মেথড বিষয়ক অন্যান্য পোস্ট:

  1. ফাইভারের টাকা ওয়াইজে আনা সম্ভব! (সাথে ২% বোনাস)
  2. পেওনিয়ার মাস্টার কার্ডের ফি এবং আবেদন প্রক্রিয়া ২০২১

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *